আসপারগার সিন্ড্রোম/লক্ষণ: এটা বলতে আমরা কি বুঝি
Asperger syndrome: what it means to us
আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষ্মনটা কি?
আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষ্মন কি সেই সম্বন্ধে ন্যাশনাল অটিস্টিক সোসাইটির লিফলেটটি আপনি হয়ত ইতিমধ্যে পড়েছেন? আমরা হচ্ছি লন্ডনের যোগাযোগকারী সামাজিক দল এবং এই দলের বয়স্ক সদস্য হিসাবে আমরা মনে করি যে এই লিফলেটে আমাদের অভিজ্ঞতা সঠিক ভাবে দেখানো হয়নি। সেইজন্য আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষ্মন, কিভাবে প্রতিদিনের চলাফেরায় আমাদের উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং কোন কোন জিনিষ আমাদের সাহায্য করছে, এই তথ্যপত্রে আমরা সেটা বর্ননা করেছি।
আমরা এখানে আমাদের অভিজ্ঞতাগুলির বর্ননা করেছি। তবে এটা মনে রাখতে হবে যে যারা
আসপারগার সিন্ড্রোমে বা লক্ষনে ভোগেন তারা প্রত্যেকেই সতন্ত্র ব্যক্তি এবং তাদের প্রত্যেকের অভিজ্ঞতাই আলাদা আলাদা। তাদের প্রত্যেকেরই বিভিন্ন ধরনের বিশেষ ক্ষমতা এবং সমস্যা থাকে, এবং এর সীমাগুলিও বিভিন্ন।
আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষণ হচ্ছে একটা অক্ষমতা, যেটা হচ্ছে অটিজম বা বাল্যকালীন বৃদ্ধির বিশৃঙ্খলার ব্যপকতার মধ্যে পড়ে । এটা মনে করা হয় যে যাদের আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষণ আছে, তাদের অক্ষমতা, এই ব্যপকতার উপরের দিকের সীমার কাছাকাছি।
অন্যান্য যারাএই ব্যপকতার মধ্যে পড়েন, তাদের মধ্যে এটাও নির্নয় করা হয় যে তাদের সাধারন অটিজম বা বাল্যকালীন বৃদ্ধির বিশৃঙ্খলা, এবং অতিরিক্ত কার্যকরী অটিজম বা বাল্যকালীন বৃদ্ধির বিশৃঙ্খলার লক্ষন থাকে। আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষন এবং অতিরিক্ত কার্যকরী অটিজম বা বাল্যকালীন বৃদ্ধির বিশৃঙ্খলাকে প্রায়ই একটার সঙ্গে আরেকটাকে বিনিময় করা হয়ে থাকে। আসপারগার সিন্ড্রোম বা আসপারজার লক্ষন কে ‘ব্যাপক বৃদ্ধির গোলযোগ’ বলে বর্ননা করা হয়। এর মানে হল যে এটা জীবনের প্রত্যেক ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে।
জনের গল্প
জনের সঙ্গে প্রথম যখন কারো আলাপ হয়, তখন তারা হয়ত বুঝতে পারেন না যে জনের কোন অসুবিধা আছে। সে স্কুলে সকলের সঙ্গে যাতে মানিয়ে চলতে পারে তার জন্য সে আপ্রান চেষ্টা করেছে কিন্তু সে সব কিছুতে যোগ দিতে পারেনি এবং সে জন্য সে নিরাশ বোধ করেছে। তাকে স্কুলের খেলার দলে কখনও নেওয়া হয়নি এবং খেলার মাঠে কি করে সকলের সঙ্গে যোগ দিতে হয়, সেটা সে জানত না, তবে অঙ্ক এবং গননার(কমপিউটিং) বিষয়ে সে খুব ভাল ছিল। এ ছাড়াও সে এটা বুঝতে পেরেছিল যে তার ঠাট্টা তামাশা(জোক) মনে রাখবার এবং এর দ্বারা বন্ধুবান্ধবদের আনন্দদানের ব্যাপারে সে খুব ভাল। ১৮ বছর বয়সে তার আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষন আছে বলে নির্নয় করা হয়। পরে তার ডিসপ্রাক্সিয়া বা শারিরীক বিশৃঙ্খলতা বা এলোমেলো ভাব এবং ডিপ্রেশন বা মানসিক চাপে ভুগছে বলে নির্নয় করা হয়।
যখন জন আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে এবং সে যদিও জিসিএসি (GCSE) তে এবং এ লেভেলে (A level) ভাল ফল করেছে, তবুও কলেজের পড়াশোনা তার কাছে কঠিন মনে হয়েছে। কলেজে তাকে বিশেষ সাহায্য দেওয়ার পর কলেজের পড়াশোনা তার কাছে অতটা কঠিন মনে হয়নি। কিভাবে চাকরীর জন্য ইন্টারভিউ দিতে হবে এবং কি ভাবে সারাদিন গুছিয়ে সব কাজ করতে হবে সেগুলির জন্য বিশেষ সাহায্য না পাওয়া পর্যন্ত তার পক্ষে চাকরী পাওয়া কঠিন হয়েছিল। এই সাহয্যের ফলে সে আরও নানারকমের সুযোগ পেয়েছে। তার নিয়োগকর্তারা মনে করেন যে জন ভাল কাজ করে, সে একজন সক্ষম কর্মী এবং কাজের খুটিনাটির ব্যাপারে তার বিশেষ নজর দেবার যোগ্যতা আছে।
জেইনের গল্প
স্কুলে জেইনের বেশী বন্ধু ছিল না। স্কুলে খেলার মাঠে অন্যরা যখন কল্পনামূলক খেলা খেলত, তখন সে সেগুলি বুঝতে পারত না এবং তার অবাক লাগত। জেইনের ক্লাসের বন্ধুরা তাকে বলত যে সে খারাপ মন্তব্য করে এবং রুড। এই ধরনের মন্তব্যগুলি অন্যরা হয়ত মনে মনে ভাবত কিন্তু কখনও মুখে বলত না। যখন সে বড় হল, তখন বাইরে যাওয়া বা হঠাত্ লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা করা তার পক্ষে কঠিন হত। তবে সে দাবা খেলতে ভালবাসত এবং দাবার ক্লাবে তার স্বামীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল। তার স্বামী এবং সন্তানরা জানে যে জেইন নিয়মানুবর্তীতা ভালবাসে এবং যদি হঠাত্ কোন কিছুর পরিবর্তন করা হয় তাহলে সে সেটা পছন্দ করে না এবং অসুখী হয়। সেইজন্য তারা সেইভাবে চলে যাতে জেইন অসুখী না হয়।
জেইন একাউন্টেন্ট বা হিসাব রক্ষকের কাজ করত। তার অফিসের অবস্থার অদল বদল না হওয়া পর্যন্ত সে সেখানে ভালভাবেই কাজ করছিল। এই সময় কর্মচারীদের মধ্যেও অনেক অদল বদল হল। এর ফলে জেইন ক্রমশ: উদ্বিগ্ন হতে আরম্ভ করল এবং তার জন্য সে তার ডাক্তারের কাছে গেল। ডাক্তার তাকে পরীক্ষার জন্য মানসিক রোগের চিকিত্সকের কাছে পাঠালেন। তিনি তখন জেইনের “আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষন” আছে বলে নির্নয় করলেন।
যাদের “আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষন আছে তাদের কি ধরনের সমস্যা হয়?
আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষন হচ্ছে একটি মৃদু বা অস্পষ্ট অবস্থা - এটা দেখা বা বোঝা কঠিন এবং ফলে কখনও কখনও লোকেরা এটা ঠিক বুঝতে পারেন না। এই অবস্থার নির্নয় করাও কঠিন। কখনও কখনও এটাকে বর্ননা করা হয় ট্রায়াড অফ ইমপেয়ারমেন্টস বা তিনধরনের ক্ষতিসাধন বা অভাব - একটি অবস্থা যার তিন রকমের কষ্ট বা অসুবিধা
- লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা করার অসুবিধা
- অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের অসুবিধা
- অনুমান বা কল্পনা করার অসুবিধা
“আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষণের মধ্যে প্রায়শই থাকতে পারে কোন কিছুতে বিশেষ আগ্রহ, এবং নিয়মের একটু উল্টাপাল্টা হলেই চিন্তিত হওয়া।
নীচে আমাদের এই অসুবিধাগুলির অভিজ্ঞতা বর্ননা করা হল
অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার অসুবিধা
- “আমার খুব ইচ্ছা করে একটা পার্টির ব্যবস্থা করতে, কিন্তু আমার কোন ধারনাই নেই যে কি করে পার্টির ব্যবস্থা করতে হয়”।
- “আমার পক্ষে কারো সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতে অন্য লোকেদের থেকে বেশী কঠিন হয়ে পড়ে।”
- “আমাদের পক্ষে সামাজিকতা করা সহজ নয়, এটা আমাদের শিখতে হয়”
- “কখনও কখনও আমরা কোন অবস্থা বা লক্ষনগুলিকে ভুল বুঝি”
- “মনে হয় যেন আমরা একটা অদৃশ্য দেওয়ালের পেছনে আছি”।
- “মনে হয় যেন আমরা জ্যামের বোতলের ভিতর একটা বোলতা”।
- “”কিভাবে অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হয় সেটা আমি সিনেমা দেখে শিখেছি। আমি জানি সিনেমার গল্পে যা হয়, বাস্তবে সেরকম হয় না।”
- “আমার পক্ষে সামাজিক ইশারাগুলি বোঝা কঠিন এবং কোন কিছু যখন ঠিক থাকে না তখন কি করতে হবে সেটা বোঝা কঠিন”।
- “আমি সবকিছুতে যোগদান করতে পারি না এবং সেটা আমার পক্ষে নৈরাশ্যজনক।”
- “কেবলমাত্র অন্যদের দিকে তাকিয়ে তাদের বয়স অথবা পদমর্যাদা কি বুঝতে আমাদের পক্ষে বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।”
- “কখনও কখনও আমাদের পক্ষে কথাবার্ত্তা চালানো কঠিন হয়ে পড়ে।”
- “আমারা দেখেছি যে কখনও কখনও, অন্যদেশের লোকেদের সঙ্গে চলাফেরা এবং মেলামেশা করা আমাদের পক্ষে সহজ।”
যোগাযোগ করার অসুবিধা
- “কখনও কখনও আরেকজন কি বলছে সেটা আমাদের বূঝতে সময় লাগে।”
- “মন্তব্যগুলি, যেমন- ‘সে দুই আর দুই যোগ করতে পারে না’ সেগুলি আমাদের পক্ষে বোঝা কঠিন হয়।”
- “আমরা সাধারনত সবকিছুই আক্ষরিক ভাবে বুঝি।”
- “কখনও কখনও আমরা হয়ত কোন একটা বিষয়ে কথা বলতেই থাকব এবং লক্ষ্যই করব না অন্যজনের এই ব্যাপারে কোন উত্সাহ নেই।”
- “কোন কিছু ভাগাভাগি করা অমাদের পক্ষে কঠিন।”
- “অনেক সময় অন্যরা যাতে আমাদের বুঝতে পারে ই, সেভাবে চলা আমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে।”
- “ আপনার যদি আসপারগার সিন্ড্রোম বা আসপারগার লক্ষণ থাকে তাহলে আলাপ-আলোচনা, বোঝা একটা অন্য ভাষা বোঝার মতই কঠিন মনে হয়।”
- “কখনও কখনও আমাদের পক্ষে অন্যদের চোখের দিকে সোজাসুজি তাকানো খুবই কষ্টকর, এবং এর ফলে লোকে আমাদের ভুল বুঝতে পারে, তারা মনে করে যে আমারা হয়ত ছলনা বা আমরা অসত্।”
কল্পনা করার সমস্যা
- “অন্যলোকেরা কি রকম বোধ করে সেটা কল্পনা করতে আমাদের অনেকেরই অসুবিধা হয়।”
- “ছোটবেলায় আমাদের কোন খেলায় বা ঠাট্টাতামাশায়, কল্পনামূলক গল্পে যোগ দেওয়া অনেক সময়ই কঠিন মনে হয়েছ। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদেরা মধ্যে কেউ কেউ এগুলি শিখেছে।”
- “অন্যেরা কতটা জানে, সেটা বুঝতে আমাদের কষ্ট হয়। এর থেকেই বেশী কষ্ট হয় অন্যরা কি চিন্তা করছে সেটা অনুমান করতে।”
- “গল্প এবং অভিনয় বোঝা আমাদের পক্ষে কঠিন।”
- “অন্যদের আবেগগুলি বোঝা আমাদের পক্ষে অনেকসময়ই কঠিন হয়ে পড়ে।”
- “মৃদু আবেগ এবং মুখের ভঙ্গীগুলি বোঝা আমাদের পক্ষে খুবই কঠিন। মুখ ভরা হাসিটা আমরা পরিস্কার ভাবে বুঝতে পারি, কিন্তু মৃদু আবেগগুলি বুঝতে অনেক বেশী অসুবিধা হয়।”
“সকলেরই এটা মনে রাখা উচিত যে, কেবলমাত্র যাদের আসপারগার সিন্ড্রোম লক্ষন আছে, তাদের পক্ষেই অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং সম্পর্ক স্থাপনের অসুবিধা আছে এমন নয়। যাদের অটিজম বা বাল্যকালীন বৃদ্ধিতে বিশৃঙ্খলা আছে, একই অবস্থায় তাদের সকলেরই অল্পবিস্তর এই অসুবিধাগুলি থাকে। তবে যারা আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষনে ভুগছেন, তাদের বেশী অসুবিধা হয়। যখন তারা জীবনে কোন কঠিন অবস্থার সামনে পড়েন তখন তারা যেরকম বোধ করেন এই ক্ষেত্রেও তারা সেরকম বোধ করেন।
বিশেষ আগ্রহগুলি
- “আমাদের সাধারনত: বিশেষ ব্যাপারে আগ্রহ থাকে এবং যেগুলি আমাদের জীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন।”
- “প্রয়োজন হলেও আমি আমার এই বিশেষ ব্যাপারে আগ্রহগুলিকে মন থেকে সরাতে পারি না।”
- “কখনও কখনও এই বিশেষ ব্যাপারে আগ্রহ বাড়ানো যেতে পারে, যাতে আমারা যেটা ভালবাসি, সেই ব্যাপারে শিখতে পারি অথবা সেটা নিয়ে কাজ করতে পারি।”
- পতাকা বা ফ্ল্যাগের ব্যাপারে আমার যে আগ্রহ আছে, সেটা মনে হয় আর কারো নেই।”
- ইলেকট্রিসিটি এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য যে পিলার বা পাইলনগুলি আছে, সেগুলি কিভাবে তৈরী করা হয়েছে, সেটা দেখতে আমার ভাললাগে।”
নিয়ম/রুটিন
- “নিয়ম বা রুটিনের পরিবর্তন হলে নুতন অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে চলতে সাধারন লোকেদেরই অসুবিধা হয়, আমাদের তার থেকেও বেশী অসুবিধা হয়। এর মানে হল ছুটিতে বেড়াতে যাওয়া অথবা নূতন চাকুরীতে সময়মত পৌছানো ইত্যাদি আমার পক্ষে শক্ত মনে হয়।”
- “কোন পরিবর্তনের ব্যপারে আমাকে যদি আগের থেকে জানানো হয় তাহলে আমার এতটা অসুবিধা হয় না, কিন্তু আগের থেকেই এর পরিকল্পনা করতে হবে, হঠাত্ করে কিছু বদলালে আমার অসুবিধা হয়।”
কারন
আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষণ হওয়ার কারন অনেকভাবেই ব্যাখ্যা করা হয়। যেমন-পারিপার্শ্বিক অবস্থাগুলি, মগজের ক্ষতি, বাচ্চার জন্মের সময়ের অসুবিধা অথবা শিশু অবস্থায় কোন অসুস্থতা। এখন পর্যন্ত এটার সঠিক কারন কি সে সম্বন্ধে কেউই নিশ্চিত নয়। এই কারন খুঁজে বের করার জন্য গবেষণা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তবে এটা মনে করা হয় যে এই লক্ষন হওয়ার কারন বহুক্ষেত্রেই বংশগত।
প্রভাব/বিস্তার
যে কোন সমাজে এবং যে কোন ভাষাভাষি লোকেদের মধ্যেই আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষন দেখা দিতে পারে। এই লক্ষন মহিলাদের থেকে পুরুষদের মধ্যে বেশী দেখা দেয়। মহিলাদের সামাজিক অসুবিধাগুলি অন্যদের পক্ষে বোঝা কঠিন। যে সকল ব্যক্তিরা আসপারগার সিন্ড্রোমে বা লক্ষনে ভোগেন, তাদের অন্যান্য ব্যক্তিদের থেকে ‘ডিসলেক্সিয়া বা যথাযথভাবে ভাষা লেখা বা পড়ার অক্ষমতা’, ‘ডিসপ্রাক্সিয়া বা শারিরীক বিশৃঙ্খলতা বা এলোমেলো ভাব’, ‘হজমের সমস্যা’ এবং ‘মানসিক স্বাস্থ্যের অসুবিধায়’ ভোগবার বেশী সম্ভবনা থাকে।
কোন কোন বিষয়ে আমরা ভাল?
আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষনে ভোগা স্বাভাবিকভাবেই চিন্তার এবং মন খারাপ হওয়ার কারন। তবে কোন কোন ব্যাপারে আমরা সাধারন লোকেদের থেকে ভাল। আমাদের মধ্যে অনেকেই খুব বুদ্ধিমান আমাদের দলের লোকেরা কি কি বিষয়ে ভাল তার কতকগুলি নমুনা দেওয়া হল।
“আমি সঠিক তথ্য এবং সংখ্যা খুব ভাল মনে রাখতে পারি যেমন - নামতা এবং গাড়ীর নম্বর। আমার কখনও কোন ফোন নম্বর লিখে রাখতে হয় না। আমি ঠাট্টা তামাশা, ছোট ছোট মজার ঘটনা এবং এমনকি পুরা সিনেমার কথাবর্ত্তা সব মনে রাখতে পারি।”
“দশ বত্সর আগে আমি যে কথাবার্ত্তা বলেছিলাম সেগুলি আমি পরিস্কারভাবে মনে করতে পারি। (এর ফলে, যখন অন্য পক্ষ কোন কিছুই মনে রাখতে পারে না, তখন ঝামেলা হতে পারে)।”
“আমি ন্যায় বিচারের পক্ষপাতী।”
“আমি কমপিউটারে খুব ভাল।”
“আমি অন্য ভাষা ভালভাবে শিখতে পারি।”
কি কি জিনিষ আমাদের সাহায্য করে?
- “যাদের আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষন আছে তাদের সমস্যা বুঝবার জন্য অন্য লোকেদের তাদের সঙ্গে সময় ব্যয় করা উচিত্।”
- শিখবার জন্য আমাদের সাহায্যের দরকার যেমন কলেজে একজন কর্মী আমাকে শিখতে সাহায্য করেছেন।”
- “কোন জিনিষ শিখবার জন্য আমাদের অনেকবার অভ্যাস করতে হয়।”
- “বাড়ীর কাজকর্ম শিখবার জন্য, এবং কিভাবে আমাদের আবেগ প্রকাশ করতে ও বন্ধু বানাতে হয়, তার জন্য আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন।”
- “অন্যদের সঙ্গে কি করে পরিস্কারভাবে যোগাযোগ করতে হয় সেটা শিখতে লোকেরা আমাদের সাহায্য করতে পারেন। কি করতে হবে, তারা সেটা ভাল করে বর্ননা করতে এবং সেটা করতে সাহায্য করতে পারেন।
- “চাকরী খুঁজে পেতে আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন। আমাকে কাজ খুঁজতে এবং যখন চাকরী পেলাম তখন যে সাহায্য আমি পেয়েছি তাতে আমার খুব উপকার হয়েছে।”
- “আমরা যখন নিজেদের ব্যবসা করি, তখনও আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন হয়।”
- “অন্যান্য ব্যক্তিরা যখন আমাদের সাহায্য করেন, তখন তাদের উচিত আমাদের সবকিছু ভাল করে বুঝিয়ে বলা এবং ঠাট্টা তামাশা করা উচিত নয়। তাদের সব সময় একই ভাবে সাহায্য করা উচিত এবং মনে রাখা উচিত যে আগে তারা কি বলেছেন।”
- “অন্য লোকেরা যদি আমাদের অবস্থার এবং ব্যবহারের প্রতি সহানুভুতিসম্পন্ন হন এবং ধৈর্য ধরে থাকেন এবং সময় সময় আমাদের অস্বাভাবিক ব্যবহার স্বীকার করে নেন, তাহলে সেটা সাহায্যকারী হয়।”
- “যদি অন্য লোকেরা বুঝতে পারেন যে আমরা হয়ত নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে অন্যদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা আরম্ভ করব না, এবং যখন আমরা মনে করব যে আমরা আলাপ আলোচনায় যোগ দিতে পারি, তখন যোগ দেব তাহলে সেটা আমাদের পক্ষে সাহায্যেকারী হবে।”
- “সামাজিক নিয়মকানুনগুলি আমাদের পরিস্কারভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে। সামাজিক পরিস্থিতে আমাদের কোনটা করা উচিত বা কোনটা করা উচিত নয় সেটা আমাদের বলতে হবে।”
- “আপনি যদি বন্ধুত্বপূর্নভাবে এবং পরিস্কারভাবে ব্যবহার করেন, তাহলে সেটা সাহায্যকারী হয়।”
- “সবসময় আমাদের ভাল দিকটা দেখতে চেষ্টা করুন।”
নিম্নলিখিত বইগুলি পড়া উপকারী হতে পারে
টনি এ়টুড আসপারগার’স সিন্ড্রোম এ গাইড ফর পেরেন্টস এন্ড প্রফেশনালস
জেসিকা কিংসলি পাবলিসারস ১৯৯৮*
গানিলা গারল্যান্ড এ রিয়েল পারসন: লাইফ অন দি আউটসাইড সুভিনিয়ার প্রেস ২০০৩*
টেমপল গ্রানডিন থিকিং ইন পিকচারস ভিনটেজ বুকস ১৯৯৬*
টেমপল গ্রানডিন এন্ড মার্গারেট সারিনিও এমারজেন্স লেবেলড অটিসটিক ওয়ারনার বুকস ১৯৮৬*
মার্টিন ইভস হোয়াট ইজ আসপারগার সিন্ড্রোম এন্ড হাও উইল ইট এ়ফক্ট মি? দি ন্যাশনাল অটিস্টিক সোসাইটি ২০০১*
লুক জ্যকসন ফ্রিকস, গিগস এন্ড আসপারগার সিন্ড্রোম জেসিকা কিংসলি পাবলিসারস ২০০২*
ওয়েন্ডি লসন লাইফ বিহাইন্ড গ্লাস জেসিকা কিংসলি পাবলিসারস ২০০২*
ক্লেয়ার সেইন্সবুরি মার্টিন ইন দি প্লেগ্রাউন্ড লাকি ডাক পাব্লিসিং লিমিটেড ২০০০*
জিসেলা এন্ড ক্রিস্টোফার স্লেটার-ওয়াকার এন আসপারগার ম্যারেজ জেসিকা কিংসলি
পাবলিসারস ২০০২*
ডিগবি ট্যানটাম এব্ড সু প্রেস্টউড এ মাইন্ড অফ ওয়ান্স ওন দি ন্যাশনাল অটিস্টিক সোসোইটি ১৯৯৯*
ডনা উইলিয়ামস নোবডি নোহোয়ার জেসিকা কিংসলি পাবলিসারস ১৯৯২*
কমপিউটারে ব্যবহার করার জন্য সাহায্যকর নির্দেশক - কেমব্রিজ ইউনিভারসিটির দ্বারা প্রকাশিত একটি সিডি রম (CD ROM) অথবা ডিভিডি রম(DVD ROM) : মাইন্ড রিডিং: দি ইন্টারেক্টিভ গাইড টু ইমোশনস হিউম্যান ইমোশনস ২০০২*
উপরোক্তগুলি ন্যাশনাল অটিস্টিক সোসাইটির প্রকাশনা বিভাগ থেকে পাওয়া যাবে। কি ভাবে অর্ডার দেবেন সেটা জানার জন্য নীচের নম্বরে ফোন করুন অথবা ই-মেইল পাঠান।
টেলিফোন: ০২০ ৭৯০৩ ৩৫৯৫
Email: [email protected]
প্রকাশনার সম্পূর্ন তালিকা এবং অন-লাইনে অর্ডার করার জন্য www,autism.org.uk এন এ এস এর ওয়েবসাইট দেখুন।
নিম্নলিখিত ঠিকানাগুলি সাহায্যকারী হতে পারে
ইউ কে তে যে সকল ব্যক্তিরা, অটিজম বা বাল্যকালীন বৃদ্ধিতে বিশৃঙ্খলার অথবা আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষ্মনের দ্বারা প্রভাবিত, ন্যাশনাল অটিস্টিক সোসাইটি তাদের জন্য সাহায্যে লাইনে তথ্য সরবরাহ করে থাকে। যেমন, তথ্যের তালিকা, আপনার এলাকায় যদি কোন সাহায্যের দল বা সাপোর্ট গ্রুপ থাকে তার সম্বন্ধে খবর অথবা কোন বিশেষ বিষয়ের তালিকার জন্য অনুরোধ করতে পারেন। যে সকল ব্যক্তিদের বিশেষ সহায়তার প্রয়োজন, তাদেরকে হেল্পলাইনের একজন কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হবে।
অটিজম হেল্পলাইন: ০৮৪৫ ০৭০ ৪০০৪ সোমবার - শুক্রবার, সময় সকাল ১০টা - বিকাল ৪টা
চিঠি লিখে অথবা ই-মেইল পাঠিয়েও নিম্নলিখিত ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারেন:
অটিজম হেল্পলাইন
৩৯৩ সিটি রোড
লন্ডন ইসি১ভি ১এন জি
ফ্যাক্স: ০২০ ৭৮৩৩ ৯৬৬৬
মিনিকম: ০২০ ৭৯০৩ ৩৫৯৭
E-mail: [email protected]
আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষ্মনে ভুক্তভোগি ব্যক্তিরা, নিউজলেটার লিখেছেন, অন্যান্য যে সকল ব্যক্তিরা আসপারগার সিন্ড্রোম বা লক্ষ্মনে ভুগছেন তাদের জন্য।
আসপারগার ইউনাইটেড
কেয়ার/অফ দি ন্যাশনাল অটিষ্টিক সোসাইটি
৩৯৩ সিটি রোড
লন্ডন ইসি১ভি ১এন জি
টেলিফোন: ০২০ ৭৯০৩ ৩৫৪১
Email: [email protected]
প্রসপেক্টস এমপ্লয়মেন্ট কনসালটেন্সি - যে সকল ব্যক্তিদের আসপারগার সিন্ড্রোম/লক্ষ্মন আছে, তাদেরকে চাকরীর ব্যপারে সহায়তার করার জন্য, এটা ন্যাশনাল অটিস্টিক সোসাইটি দ্বারা সমর্থিত
প্রসপেক্ট লন্ডন
স্টুডিও ৮
দি আইভরিস
৬-৮ নর্থহাম্পটন স্ট্রীট
লন্ডন এন১ ২এইচ ওয়াই
টেলিফোন: ০২০ ৭৭০৪ ৭৪৫০
ফ্যাক্স: ০২০ ৭৩৫৯ ৯৪৪০
E-mail: [email protected]
প্রসপেক্ট গ্লাসগো
ফার্ষ্ট ফ্লোর
সেন্ট্রাল চেম্বারস
১০৯ হোপ স্ট্রীট
গ্লাসগো জি২ ৬এল এল
টেলিফোন: ০১৪১ ২৪৮ ১৭২৫
ফ্যাক্স: ০১৪১ ২২১ ৮১১৮
E-mail: [email protected]
প্রসপেক্ট ম্যানচেস্টার
এ়ংলো হাউস
চ্যাপেল রোড
ম্যানচেস্টার এম২২ ৪জে এন
টেলিফোন: ০১৬১ ৯৯৮ ০৫৭৭
ফ্যাক্স: ০১৬১ ৯৪৫ ৩০৩৮
E-mail: [email protected]
প্রসপেক্ট সেফিল্ড
সেফিল্ড হালাম ইউনিভার্সিটি
স্কুল অফ এডুকেশন
৩৫ ব্রুম গ্রোভ রোড
সেফিল্ড এস১০ ২এন এ
টেলিফোন: ০১১৪ ২২৫ ৫৬৯৫
ফ্যাক্স: ০১১৪ ২২৫ ৫৬৯৬
E-mail: [email protected]
১৬ বত্সরের বেশী বয়সের ছাত্র ছাত্রী যাদের এই অক্ষমতা আছে, তাদের জন্য: স্কিল (ন্যশনাল ব্যুরো ফর স্টুডেন্টস উইথ ডিসেবিলিটিস)
চাপ্টার হাউস
১৮ ক্রুসিফিক্স লেন
লন্ডন এস ই১
টেলিফোন: ০২০ ৭৪৫০ ০৬২০
ফ্যাক্স: ০২০ ৭৪৫০ ০৬৫০
সাহায্যর লাইন/হেল্পলাইন: ০৮০০ ৩২৮ ৫০৫০
Email: [email protected]
Website: www.skill.org.uk
This document was provided by The National Autistic Society. www.nas.org.uk